রবিবার, ২৮শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, রাত ১০:১০

শিরোনাম :
প্রচার-প্রচারণায় ভোটারদের মন জয় করছেন ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী জসিম যারা আমার জন্য কাজ করেছে আমি তাদের রেখে কখনো পালিয়ে যাইনি-এসএম জাকির হোসেন রেমিটেন্স আহরণে রূপালী ব্যাংকের ২ দিন ব্যাপী ক্যাম্পেইন সম্পন্ন সদর উপজেলা নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী জসিম উদ্দিনের মনোনয়ন বৈধ ঘোষনা বরিশালের দুই উপজেলায় বৈধতা পেলেন ২৫ প্রার্থী ঝালকাঠিতে বেপরোয়া ট্রাক কেড়ে নিল ১৪ প্রাণ বরিশাল সদরে ভাইস চেয়ারম্যান পদে হাদিস মীরের মনোনয়ন দাখিল বরিশালে তীব্র গরমে নাভিশ্বাস জনজীবন,বিপাকে নিম্ন আয়ের মানুষ! বরিশাল সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদে জসিম উদ্দিনের মনোনয়নপত্র দাখিল বরিশাল সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে এসএম জাকির হোসেনের মনোনয়নপত্র দাখিল
‘পাথরখেকো’দের দৌরাত্ম্য বন্ধ করুন

‘পাথরখেকো’দের দৌরাত্ম্য বন্ধ করুন

dynamic-sidebar

সিলেটে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলনকালে ঝরিয়া পড়িয়াছে এক নারীসহ পাঁচজন দরিদ্র শ্রমজীবী মানুষের জীবন। আহতও হইয়াছেন কয়েকজন। গত মঙ্গলবার বিকালে গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলঙে মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটে। সিলেটের সহকারী পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান খান জানাইয়াছেন যে, জেলা প্রশাসনের জমি ইজারা লইয়া অবৈধভাবে পাথর তুলিতেছিল একটি চক্র। মাটির ১০-১৫ ফুট গভীরে গর্ত খুঁড়িয়া পাথর তুলিবার সময়ে হঠাত্ গর্তের পাড় ধসিয়া হতভাগ্য শ্রমিকেরা চাপা পড়ে। গর্তের মালিকসহ দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হইবে বলিয়া জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা। অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন ও নরবলির এই ঘটনা চলিয়া আসিতেছে দীর্ঘদিন যাবত্। সংবাদপত্রে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, শুধু গত ১১ মাসেই এইভাবে পাথর তুলিতে গিয়া অন্তত ৩২ জনের মৃত্যু হইয়াছে। বলা বাহুল্য, তাহাদের বেশিরভাগই শ্রমিক। সর্বশেষ গত ৭ নভেম্বর কানাইঘাটের বাংলা টিলা এলাকায় মর্মান্তিকভাবে প্রাণ হারাইয়াছিল ৫ শিশুসহ ৬ জন। তখনো প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ হইতে একই প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করা হইয়াছিল। তত্সত্ত্বেও ‘পাথরখেকো’দের দৌরাত্ম্য যে থামে নাই—পাঁচজন শ্রমিক জীবন দিয়া আবারও তাহা প্রমাণ করিয়া গেল।

প্রসঙ্গত বলা প্রয়োজন যে, কোয়ারিতে যন্ত্র ব্যবহার করিয়া ও টিলা কাটিয়া পাথর উত্তোলনের উপর উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞা রহিয়াছে। শুধু তাহাই নহে—জাফলং, ভোলাগঞ্জ ও শাহ আরেফীন টিলাসহ কয়েকটি কোয়ারিতে পাথর উত্তোলনে নিষেধাজ্ঞা জারি করিয়াছে খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ও। কিন্তু কোনো নিষেধাজ্ঞাই গ্রাহ্য করিতেছে না পাথরখেকোরা। অবৈধভাবে উত্তোলিত এই পাথর যে কেবল জীবনহানির কারণ হইতেছে তাহাই নহে, গুরুতর বিপর্যয়ের মুখে ঠেলিয়া দিতেছে সংশ্লিষ্ট এলাকার প্রকৃতি এবং পরিবেশকেও। জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা ইহার জন্য যথারীতি একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ীদের দায়ী করিয়াছেন। তবে বেপরোয়া এই ব্যবসায়ীদের খুঁটির জোরটি কোথায় সেই কথা তাহারা বলেন নাই। কেবল এইটুকু বলিয়াছেন যে, তাহারা নিয়মিত অভিযান চালাইতেছেন, মামলাও করিতেছেন, কিন্তু তাহাতে কাজ হইতেছে না। কিন্তু বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতিসহ সংশ্লিষ্ট অনেকেই মনে করেন যে, অবৈধভাবে পাথর উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে প্রশাসন আইনগত ব্যবস্থা না নেওয়ায় সাধারণ শ্রমিকদের লাশের মিছিল বাড়িতেছে। বিপন্ন হইতেছে পরিবেশ।

মূল কথাটি হইল, পুরো গাছটি অক্ষত রাখিয়া ডালপালা ছাঁটিলেই-বা কী! উপর্যুপরি প্রাণহানির পরও অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন কেন বন্ধ হইতেছে না তাহা সকলেই জানেন। অতএব, প্রশাসনেরও না জানিবার কথা নহে। সত্যি সত্যিই যদি তাহারা মনে করেন যে, ইহা বন্ধ করা দরকার তাহা হইলে কী করা দরকার— তাহাও প্রশাসন ভালো করিয়া জানে বলিয়াই আমাদের বিশ্বাস। আমরা শুধু এইটুকু বলিব যে, জীবন ও পরিবেশের এই ধ্বংসযজ্ঞ বন্ধ করিবার জন্য যাহা করা প্রয়োজন তাহাই করুন। দিনের পর দিন এই অবস্থা চলিতে পারে না।

আমাদের ফেসবুক পাতা

© All rights reserved © 2018 DailykhoborBarisal24.com

Desing & Developed BY EngineerBD.Net